আল-আকসা চত্বরে উত্তেজনা, দুই দফায় অনুপ্রবেশ ইসরায়েলিদের
দখলকৃত পূর্ব জেরুজালেমের পবিত্র আল-আকসা মসজিদ প্রাঙ্গণে আবারও উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। অবৈধ ইসরায়েলি বসতির প্রায় দুই শতাধিক বাসিন্দা কড়া পুলিশি নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে মসজিদ চত্বরে জোরপূর্বক প্রবেশ করায় পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়েছে। ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ মনে করছে, এ ধরনের অনুপ্রবেশ আল-আকসার ধর্মীয় মর্যাদা ও ঐতিহাসিক অবস্থানকে সময় ও স্থানভিত্তিকভাবে ভাগ করার দীর্ঘমেয়াদি প্রচেষ্টার অংশ। খবর—টিআরটি ওয়ার্ল্ড।
জেরুজালেম প্রাদেশিক প্রশাসনের বিবৃতি অনুযায়ী, গতকাল মঙ্গলবার সকাল ও বিকেলে দুই দফায় মোট ১৮২ জন অবৈধ বসতির বাসিন্দা আল-আকসা মসজিদে ঢুকে কুব্বাতুস সাখরার কাছাকাছি তালমুদিক আচার-অনুষ্ঠান পালন করে। একই দিন ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ নিয়ন্ত্রিত গেট দিয়ে ৭৭৮ জন বিদেশি পর্যটকও মসজিদ প্রাঙ্গণে প্রবেশ করে।”সরকারি হিসাব বলছে, শুধু নভেম্বর মাসেই আল-আকসায় ঢুকেছে ইসরায়েলি বসতির ৪ হাজার ২৬৬ জন বাসিন্দা এবং প্রায় ১৫ হাজার বিদেশি পর্যটক।
আল-আকসা মসজিদ বিশ্বের মুসলমানদের কাছে তৃতীয় পবিত্রতম ধর্মীয় স্থান হিসেবে স্বীকৃত। ১৯৬৭ সালের আরব-ইসরায়েল যুদ্ধের পর ইসরায়েল পূর্ব জেরুজালেম দখলে নেয় এবং ১৯৮০ সালে শহরটি নিজেদের সঙ্গে যুক্ত ঘোষণা করে। তবে আন্তর্জাতিক পরিসরে এই পদক্ষেপ গ্রহণযোগ্যতা পায়নি।
বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম জানায়, বহু বছর ধরে মরক্কো গেট দিয়ে এমন অনুপ্রবেশ ঘটছে। আল-আকসা চত্বরে অবৈধ বসতির বাসিন্দাদের উসকানিমূলক অবস্থান ও ধর্মীয় আচারকে জেরুজালেমের বহু প্রতিষ্ঠান মসজিদ এলাকার ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার ধারাবাহিক প্রয়াস হিসেবে দেখে।
ইসলামিক ওয়াকফ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আল-আকসার পুরো ১৪৪ দুনুম জায়গা মুসলমানদের ইবাদতের জন্য নির্ধারিত এবং এর ধর্মীয় মর্যাদা অক্ষুণ্ণ রাখা জরুরি।
মক্কা ও মদিনার পর আল-আকসা মসজিদ ইসলাম ধর্মের তৃতীয় গুরুত্বপূর্ণ স্থান হিসেবে বিশ্বব্যাপী মুসলমানদের কাছে গভীরভাবে শ্রদ্ধার। ফিলিস্তিনসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মুসলিমরা প্রতিবছর এখানে আসেন। মসজিদটি ফিলিস্তিনি প্রতিরোধের প্রতীক হিসেবেও বিবেচিত। এক প্রাঙ্গণে মুসলিম, ইহুদি ও খ্রিস্টানদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বহু স্থাপনা রয়েছে—যা তিন ধর্মের ইতিহাস ও ঐতিহ্যের সঙ্গে মিলেমিশে আছে।
আরবি ভাষায় আল-আকসা শব্দের অর্থ ‘সবচেয়ে দূর’, যা মক্কা থেকে এর অবস্থানকে নির্দেশ করে। ইসলামের পবিত্র গ্রন্থ আল কুরআনেও এর উল্লেখ রয়েছে, যেখানে মসজিদটির ‘উচ্চ মর্যাদা’ তুলে ধরা হয়েছে। মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)–এর মিরাজের ঘটনার সঙ্গেও এ মসজিদের গভীর ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে।#smk












