গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে ‘ঐক্য বজায় রাখার’ ডাক দিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যে কোনো মূল্যে এই রক্তস্রোত, মায়ের অশ্র“ধারা যেন বৃথা না যায় তা নিশ্চিত করতে হবে। ঐক্য বজায় রাখতে হবে।
মঙ্গলবার বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে বিএনপি আয়োজিত জুলাই-আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানের শোক ও বিজয়ের প্রথম বর্ষপূর্তির বিশেষ অনুষ্ঠানে এ আহবান জানান তিনি।"
গুলশানের বাসা ‘ফিরোজা’ থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে দেওয়া বক্তৃতায় তিনি গুম, খুন ও বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার ব্যক্তিদের তালিকা তৈরি ও রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দেওয়ার তাগিদ দেন।
‘জুলাই ২০২৪ : জাতীয় ঐক্য ও গণতান্ত্রিক অভিযাত্রা’ শীর্ষক শহিদ পরিবারের সম্মানে এ আলোচনা সভা করে বিএনপি। লন্ডন থেকে আলোচনা সভা ভার্চুয়ালি উদ্বোধন করেন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
খালেদা জিয়া বলেন, আমাদের সামনে যে সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে নতুন করে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়ার তা আমাদের দ্রুত সম্পন্ন করতে হবে। কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে হবে। জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। সর্বোপরি বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বকে রক্ষা করতে হবে। যেকোনো মূল্যে বীরের এই রক্তস্রোত, মায়ের অশ্র“ধারা যেন বৃথা না যায় তা নিশ্চিত করতে হবে। ঐক্য বজায় রাখতে হবে। "
আসুন আমরা সবাই মিলে শহিদ জিয়ার স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করি। বাস্তবায়িত করি কোটি মানুষের নতুন বাংলাদেশের নির্মাণের স্বপ্নকে।
সংক্ষিপ্ত বক্তব্যের শুরুতে তিনি বলেন, রক্তস্নাত জুলাই-আগস্ট এক বছর পর আমাদের মাঝে ফিরে এসেছে। দীর্ঘ ১৬ বছর ফ্যাসিস্টদের নির্মম অত্যাচার, নির্যাতন, গ্রেফতার, হত্যা ও খুনের মাধ্যমে গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে এবং একদলীয় শাসন ব্যবস্থা চিরস্থায়ী করতে চেয়েছিল আওয়ামী শাসক গোষ্ঠী। ছাত্র-জনতার সম্মিলিত অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে ফ্যাসিবাদের পতন ঘটেছে। সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে নতুন করে বাংলাদেশকে গড়বার। এই আন্দোলনে যারা শহিদ হয়েছেন, তাদের জানাই আন্তরিক শ্রদ্ধা। তাদের এই আত্মত্যাগ জাতি চিরকাল মনে রাখবে।"
গুম-খুন-বিচারবর্হিভূত হত্যার শিকার ব্যক্তিদের তালিকা করার প্রতি জোর দিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, গুম-খুন-বিচারবর্হিভূত হত্যার শিকার যারা হয়েছেন তাদের তালিকা প্রস্তুত করতে হবে। দ্রুত বিচারের ব্যবস্থা করতে হবে এবং রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি নিশ্চিত করতে হবে। প্রতিটি পরিবারের সন্মান এবং তাদের পুনর্বাসন এবং তাদের নিরাপদ ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে হবে।"
বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে হবে। জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। সর্বোপরি বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষা করতে হবে। এসময় সবাইকে বাংলাদেশ নির্মাণের শহিদ জিয়ার স্বপ্নকে বাস্তবায়নের আহŸান জানান তিনি।
বিকেল ৩টায় কোরআন তেলাওয়াত ও মোনাজাতের মধ্যে দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হয়। এরপর শহিদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন ও জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশ করা হয়। গণঅভ্যুত্থানের ওপর প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শিত হয়।smk