টানা বর্ষণে হাঁটুপানিতে তলিয়ে গেছে বাগেরহাট শহরের প্রধান সড়ক থেকে শুরু করে গলি, বাড়িঘর থেকে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান—সবই। দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে জনজীবন। পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন শহর ও আশপাশের এলাকার হাজারো মানুষ।
গত রোববার (৬ জুলাই) দিবাগত রাত থেকে শুরু হওয়া টানা বৃষ্টিপাত মঙ্গলবার (৮ জুলাই) পর্যন্ত থামার নাম নিচ্ছে না। সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, শহরের খানজাহান আলী রোড, রেল রোড, সাধনার মোড়, শালতলা, পিটিআই মোড়, খারদার স্কুল রোড, জেলা হাসপাতাল মোড়, জেলা ডাকঘরের সামনে, বাসাবাটি, নাগেরবাজার লেক রোড, মিঠাপুকুরপাড় মোড়, পৌরসভার পাশের এলাকা, জাহানাবাদ মাধ্যমিক বিদ্যালয় সড়ক, মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের পেছনসহ অধিকাংশ এলাকায় হাঁটুপানি জমে রয়েছে।
পানি ঢুকে পড়েছে অনেক দোকান ও বাসাবাড়িতে। শহরের রাস্তায় জলাবদ্ধতার কারণে যান চলাচলও ব্যাহত হচ্ছে। সবচেয়ে বিপাকে পড়েছেন দিনমজুর, রিকশাচালক ও খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষ।
রিকশাচালক মো. শাহিন বলেন, সকাল থেকে এখন দুপুর ১২টা, মাত্র ৫০ টাকা আয় হয়েছে। পানিতে রিকশা চালানো যাচ্ছে না, যাত্রীও কম।
শহরের বাসিন্দা গৃহবধূ জেসমিন আক্তার জানান, বাড়ির ভেতরে পানি উঠে গেছে। চুলায় আগুন ধরানো যাচ্ছে না। ছোট ছেলেটা পানিতে ভিজে সর্দি-জ্বরে ভুগছে।
ব্যবসায়ী ফিরোজ শেখ বলেন, দোকানে পানি উঠে গেছে। অনেক কষ্ট করে মালামাল সরিয়ে রেখেছি। বিক্রি নেই, লোকসান গুনতে হচ্ছে।
শুধু শহরেই নয়, জেলার মোরেলগঞ্জ, শরণখোলা, মোংলা, রামপাল ও কচুয়ার নিম্নাঞ্চলেও জলাবদ্ধতার খবর পাওয়া গেছে। এসব এলাকার অনেক মাছের ঘের পানিতে তলিয়ে গেছে। ভেসে গেছে মাছ।
এ বিষয়ে বাগেরহাট পৌরসভার প্রশাসক ডা. ফখরুল হাসান বলেন, পৌর এলাকায় বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে। কাজগুলো দৃশ্যমান হলে এই ভোগান্তি অনেকটাই কমে যাবে। জলাবদ্ধতা নিরসনে একটি দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হচ্ছে।
বৃষ্টির এ ধারাবাহিকতায় শহরবাসী আশঙ্কায় রয়েছেন, আবহাওয়া স্বাভাবিক না হলে দুর্ভোগ আরও বাড়তে পারে। এখনই কার্যকর উদ্যোগ না নিলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হতে পারে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।#