সোমবার, ০৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২:৩৪ অপরাহ্ন
বিজ্ঞপ্তি:

বাগেরহাটে শিক্ষকতার আড়ালে অনৈতিক কার্যকলাপের অভিযোগ।উত্তাল

বাগেরহাট প্রতিনিধি: / ৩২ বার
আপডেট সময় : রবিবার, ৭ ডিসেম্বর, ২০২৫


বাগেরহাট সদর উপজেলার ষাট গম্বুজ ইউনিয়নের সুন্দরঘোনা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ইসলাম শিক্ষা বিভাগের শিক্ষক মোঃ আনোয়ারুস সায়াদাত-এর বিরুদ্ধে ছাত্রীদের প্রতি অশ্লীল ভাষায় কুরুচিপূর্ণ প্রস্তাব, যৌন হয়রানি এবং মানসিক নির্যাতনের গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও এলাকাবাসী রবিবার (৭ ডিসেম্বর) সকাল ১০টায় পরীক্ষা বর্জন করে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন।
শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করে বলেন, অভিযুক্ত শিক্ষক দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন ছাত্রীকে অশালীন মন্তব্য, বার্তা প্রেরণ, একান্তে ডেকে কুবচন করা এবং ভয়ভীতি প্রদর্শন করে আসছিলেন। বারবার অভিযোগ জানালেও কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায় তারা নিরাপত্তাহীন পরিবেশে পড়াশোনা করতে বাধ্য হচ্ছিলেন। তাই বিচার ও নিরাপত্তার দাবিতে তারা পরীক্ষাসহ সব শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ করে রাস্তায় নেমে আসতে বাধ্য হয়েছে।
অভিভাবকরাও ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, মেয়েদের নিরাপত্তার জন্যই তারা সন্তানদের স্কুলে পাঠান। অথচ একজন শিক্ষকই যদি তাদের প্রতি অনৈতিক আচরণ করেন, তাহলে স্কুলের পরিবেশ কীভাবে নিরাপদ থাকবে? তারা দ্রুত ব্যবস্থা নিয়ে অভিযুক্ত শিক্ষককে অপসারণের জোর দাবি জানান।
অভিযোগ রয়েছে, বিষয়টি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শেখ মিতয়ার রহমানকে জানানো হলেও তিনি যথাযথ ব্যবস্থা না নিয়ে ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। এতে বিদ্যালয়ের স্বাভাবিক পরিবেশ ব্যাহত হয়েছে বলে অভিভাবকদের দাবি।
শিক্ষার্থী–অভিভাবকদের প্রধান দাবি:১. অভিযুক্ত শিক্ষক মোঃ আনোয়ারুস সায়াদাতকে দ্রুত বরখাস্ত করে নিরপেক্ষ তদন্ত নিশ্চিত করা।
২. ছাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিদ্যালয়ে প্রয়োজনীয় সুরক্ষা ব্যবস্থা গ্রহণ।
৩. জেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে একটি স্বচ্ছ তদন্ত কমিটি গঠন।
৪. ঘটনাটি গোপন করার অভিযোগে প্রধান শিক্ষকের ভূমিকা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া।
অভিযোগকারীরা জানান, ঘটনার সঙ্গে সম্পর্কিত অডিও, ভিডিও, স্ক্রিনশটসহ বিভিন্ন প্রমাণ জেলা প্রশাসনের কাছে জমা দেওয়া হয়েছে। এসব যাচাই করে দ্রুত কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানানো হয়েছে।
মোঃ আনোয়ারুস সায়াদাত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন,জুলাই মাসের ৫ তারিখে আমার ফেসবুক আইডি হ্যাক হয়ে নাম ‘অজানা পাখি পাখি’ করে দেওয়া হয়। এরপর ৬ জুলাই আমি ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে বিষয়টি জানাই। আমার আইডি হ্যাকের সময় কেউ এই চ্যাটগুলো পাঠিয়ে থাকতে পারে। তাই এসব বার্তা আমার বলে দাবি করা ঠিক নয়।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শেখ মিতয়ার রহমান বলেন,কিছু ছাত্রী স্ক্রিনশট দিলেও সেগুলোতে তারিখ ছিল না। পরে শিক্ষকের আইডি থেকে পাঠানো বলে মনে হলেও আমি তাদের লিখিত অভিযোগ আনতে বলেছিলাম। অভিযুক্ত স্যার জানিয়েছেন, তার আইডি হ্যাক হয়েছিল, সেই সময় এমন বার্তা পাঠানো হতে পারে।
বাগেরহাট সদর উপজেলার সহকারী ভূমি কমিশনার (এসি ল্যান্ড) এস. এম. নুরুন্নবী বলেন, ঘটনার খবর পেয়ে বিদ্যালয়ে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি পরিদর্শন করেছি এবং শিক্ষার্থী–অভিভাবকদের বক্তব্য শুনেছি। পরিস্থিতি শান্ত রাখতে সবাইকে ধৈর্য ধরতে বলা হয়েছে। আপাতত অভিযুক্ত শিক্ষকের সব একাডেমিক দায়িত্ব স্থগিত করে তাকে জেলা প্রশাসন দপ্তরে তদন্তের জন্য তলব করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধেও অভিযোগ থাকায় তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাকে সাময়িকভাবে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। তদন্ত অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। শিক্ষার্থীদের দাবি, আমরা নিরাপদ পরিবেশে পড়তে চাই। অনৈতিক শিক্ষকের আমাদের বিদ্যালয়ে কোনো স্থান নেই।#rj


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর

পুরাতন খবর

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১
১৩১৫১৬১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭৩০৩১  
এক ক্লিকে বিভাগের খবর