যশোরের ৯ থানায় চালু হলো অনলাইন জিডি

পুলিশি সেবা সহজীকরণ ও ডিজিটালাইজেশনের অংশ হিসেবে যশোর জেলার ৯টি থানায় চালু হয়েছে অনলাইন সাধারণ ডায়েরি (জিডি) সেবা।
মঙ্গলবার (২২ জুলাই) দিবাগত রাত ১২টা ১ মিনিটে যশোর কোতোয়ালি মডেল থানায় এ কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন পুলিশ সুপার রওনক জাহান।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে পুলিশ সুপার নিজে দাঁড়িয়ে থেকে অনলাইন কার্যক্রম পরিদর্শন করেন এবং সেবা নিতে আসা নাগরিকদের সঙ্গে কথা বলেন। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) আবুল বাশার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক সার্কেল) আহসান হাবীব, কোতোয়ালি থানার অফিসার ইনচার্জ আবুল হাসনাত এবং পরিদর্শক (তদন্ত) কাজী বাবুল প্রমুখ।
এর আগে অনলাইনে কেবল হারানো ও প্রাপ্তি সংক্রান্ত জিডি করার সুযোগ থাকলেও এখন থেকে সব ধরনের জিডি করা যাবে থানায় না গিয়ে। ঘরে বসেই মোবাইল কিংবা কম্পিউটার ব্যবহার করে নাগরিকরা তাদের অভিযোগ জানাতে পারবেন।
অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের উদ্দেশে পুলিশ সুপার রওনক জাহান বলেন, ‘পুলিশি সেবা মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে এই অনলাইন জিডি চালু করা হয়েছে। এতে মানুষের সময়, অর্থ ও ভোগান্তি কমবে। পাশাপাশি পুলিশের প্রতি আস্থা বাড়বে।’
তিনি আরও জানান, ‘এখন থেকে অনলাইনে নিখোঁজ ব্যক্তি সংক্রান্ত অভিযোগসহ মোট ২৯ ধরনের অধর্তব্য অপরাধের বিষয়ে সাধারণ ডায়েরি করা যাবে। এর জন্য ‘online GD’ নামক অ্যাপটি গুগল প্লে স্টোর থেকে ডাউনলোড করে একবার রেজিস্ট্রেশন করলেই হবে।
সেবা চালুর পরই প্রথম অনলাইন জিডি করেন যশোর শহরের শেখহাটি জামরুলতলার বাসিন্দা রহিমা বেগম (৫১)। তিনি জানান, স্বামী রাজুর নির্যাতনে অতিষ্ঠ হয়ে থানায় অভিযোগ দিতে এসেছিলেন। অনলাইন সেবার কথা না জানলেও, ডিউটিরত অফিসারের সহায়তায় নিজের মোবাইল থেকেই অনলাইন জিডি করতে সক্ষম হন।
রহিমা বেগম বলেন, ‘এর আগে কম্পিউটারের দোকানে লাইন দিয়ে অভিযোগ লিখিয়ে জমা দিতে হতো। এবার থানায় এসেই মোবাইল থেকে অভিযোগ দিতে পেরেছি। যদি আগে জানতাম, তাহলে বাসা থেকেই দিতে পারতাম।’
পুলিশ জানায়, যেকোনো অভিযোগকারী অনলাইন জিডির মাধ্যমে তার অভিযোগের সর্বশেষ অগ্রগতি জানতে পারবেন। তদন্ত কর্মকর্তা কে, কী ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে, তাও জানা যাবে।
সেবা নিতে কারো সমস্যা হলে ২৪ ঘণ্টা চালু থাকা ০১৩২০০০১৪২৮ নম্বরে যোগাযোগের পরামর্শ দিয়েছে পুলিশ। এছাড়া যাদের নিজস্ব স্মার্টফোন বা ইন্টারনেট নেই, তারা ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারের মাধ্যমে অনলাইন জিডির সহায়তা নিতে পারবেন।
পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়, প্রতিটি অনলাইন জিডি সিস্টেমে ট্র্যাক করা সম্ভব। নিরাপদ ও নির্ভরযোগ্য তথ্য সংরক্ষণ ব্যবস্থাও নিশ্চিত করা হয়েছে।
এই উদ্যোগে যশোরবাসী যেমন সহজে পুলিশি সেবা পাবে, তেমনি থানার কাজেও স্বচ্ছতা ও গতিশীলতা বাড়বে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
আরও পড়ুন: যশোরে দুই দশকের অধিক পুরাতন ও ঝুঁকিপূর্ণ বাস-ট্রাক চলাচল বন্ধে অভিযান#