-রামপাল-মোংলা সড়কের বেহাল দশা: ধীরগতির কাজে জনদুর্ভোগ চরমে।উত্তাল

বাগেরহাট জেলার গুরুত্বপূর্ণ দশানী-রামপাল-মোংলা আঞ্চলিক মহাসড়কের নির্মাণ কাজে ধীরগতির কারণে জনদুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। সংস্কারের জন্য খোঁড়াখুঁড়ি, রাস্তার ওপর এলোমেলো খোয়া ও একের পর এক বড় গর্তে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে প্রায় ৩৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এই সড়ক। ফলে প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা, ভোগান্তিতে পড়ছেন সাধারণ মানুষ।
এ অবস্থার প্রতিবাদে বুধবার (২৫ জুন) দুপুরে বাগেরহাট শহরের দশানী ট্রাফিক মোড়ে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন স্থানীয়রা। তারা সড়কের প্রথম প্যাকেজের দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ‘মাহবুব ব্রাদার্স’-এর কার্যাদেশ বাতিল করে নতুন ঠিকাদার নিয়োগের দাবিতে স্লোগান দেন। মানববন্ধন থেকে জানানো হয়, এক সপ্তাহের মধ্যে কাজ শুরুর আশ্বাস না পেলে আরও কঠোর আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
স্থানীয় বাসিন্দা আমির আলী বিশ্বাস বলেন, দীর্ঘদিন ধরে এই সড়কের বেহাল দশা। চলাচলের কোনো উপায় নেই। রোগী, শিক্ষার্থী, সাধারণ মানুষ—সবাই দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। এখনই সংস্কার না করলে ভোগান্তি আরও বাড়বে।
আরেক স্থানীয় সাইফুল ইসলাম বলেন, শুকনো মৌসুমে ধুলোর কারণে ঘরে থাকা যায় না, আর বর্ষায় কাদা-পানিতে চলাচল অসম্ভব হয়ে পড়ে। এই অব্যবস্থাপনার জন্য শুধু ঠিকাদার না, সড়ক বিভাগের দায়িত্বশীলদেরও জবাবদিহিতার আওতায় আনতে হবে।
সড়ক বিভাগ সূত্র জানায়, ৩৩.৮৭ কিলোমিটার দীর্ঘ এই মহাসড়কের উন্নয়ন প্রকল্পে ৪টি প্যাকেজে মোট ৩টি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে ২০২২ সালের আগস্ট মাসে কার্যাদেশ দেওয়া হয়। প্রকল্পে ৮টি সেতু, ২১টি কালভার্ট নির্মাণ ও জমি অধিগ্রহণসহ ব্যয় ধরা হয়েছে ৪৬৭ কোটি টাকা।
তবে প্রথম প্যাকেজে দশানী থেকে হেলাতলা পর্যন্ত ১০ কিলোমিটার সড়কের দায়িত্বপ্রাপ্ত মাহবুব ব্রাদার্স মাত্র ১৫ শতাংশ কাজ শেষ করতে পেরেছে। দুই দফা সময় বাড়ানোর পরও অগ্রগতি না হওয়ায় গত ২২ মে প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে চুক্তি বাতিল করেছে সড়ক বিভাগ।
বাগেরহাট সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আশরাফুল ইসলাম বলেন, মোট ৪টি প্যাকেজের মধ্যে ৩টি প্যাকেজে প্রায় ৮০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। কিন্তু প্রথম প্যাকেজের কাজ অসম্পূর্ণ থাকায় ঠিকাদারকে বাতিল করা হয়েছে। আমরা দ্রুত নতুন দরপত্র আহ্বান করবো, প্রস্তুতি চলছে।
স্থানীয়দের দাবি, দ্রুত নতুন ঠিকাদার নিয়োগ দিয়ে কাজ শুরু না হলে এই সড়ক আরও ভয়াবহ অবস্থায় পৌঁছাবে, যা জেলার আর্থসামাজিক উন্নয়নেও প্রভাব ফেলবে।##tn