পৌর শহরের ও উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় মাদকে ছয়লাব,আসক্ত হচ্ছে যুবসমাজ উদ্বেগে স্থানীয়রা

। বাগেরহাটের বিভিন্ন এলাকায় মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে মাদকের কারবার। শহর থেকে উপজেলা, আর গ্রাম থেকে ঘনবসতিপূর্ণ মহল্লা অনেক জায়গাতেই রাতে-ভোরে ছোট ছোট মাদক পয়েন্ট চোখে পড়ছে স্থানীয়দের। সবচেয়ে বেশি বিস্তার ইয়াবা, গাঁজাকে কেন্দ্র করে।

স্থানীয়দের অভিযোগ,কিছু চক্র সক্রিয় রয়েছে যাদের পেছনে রয়েছে বড় নেটওয়ার্ক। স্কুল-কলেজ পড়ুয়া তরুণদের হাতেও মাদক ছড়িয়ে পড়ছে—যা অভিভাবকদের উদ্বেগ আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।

মাদক ব্যবসার ছয়লাব থামাতে প্রশাসনের উদ্যোগ থাকলেও, স্থানীয়দের অভিযোগ—এখনো অনেক জায়গায় দৃশ্যমান পরিবর্তন নেই। তাই প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে—সমস্যা চিহ্নিত হলেও সমাধান কি এখনো দূরে?

স্থানীয়রা আরো বলেন আর এ সমস্ত মাদকে আসক্ত হয়ে পড়ছে এলাকার শিক্ষিত বেকার, তরুণ আর যুব সমাজ।মাদকের টাকা সংগ্রহ করতে না পেরে অনেকেই আবার জড়িয়ে পড়েছে চুরি,সিনতাই, ডাকাতির মত বিভিন্ন অপরাধমুলক কর্মকান্ডে।তাদের নিয়ে অভিভাবকরা ও এখন উদ্বিগ্ন। কিছু কিছু ভদ্রবেশী উঠতি বয়সী ইয়াবা ব্যবসায়ীরা প্যান্ট শার্ট পড়ে পকেটে ১/২ শ ইয়াবা নিয়ে বিভিন্ন গুরুত্ব পূর্ন ষ্পটে ঘুড়ে ঘুড়ে বিক্রি করছে মরণনেশা ইয়াবা।কিন্তু তাদের দেখে কেউ বিশ্বাসও করতে পারবে না তারা মাদক ব্যবসায়ী।আবার কেউ কেই বড় বড় মাদকের চালান পাচার করছে।

অনেকেই আবার মাদকাসক্ত হয়ে মাদকের টাকা সংগ্রহ করতে না পেরে টাকার জন্য মা বাবাকে মারপিট করতে শোনা যাচ্ছে। বিভিন্ন এলাকার বেশ কয়েকজন মাদক সেবীকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদন্ড দেয়ার কথাও শোনা যাচ্ছে।অল্প সংখ্যক ছোট ছোট মাদকসেবীদের অনেক সময় আইনের আওতায় আনতে পারলেও বড় বড় মাদক ব্যবসায়ীও রাগব বোয়ালরা ধরা ছোঁয়ার বাহিরে থেকে যাচ্ছে। প্রশাসন,সচেতন জনগণ ও নির্বাচিত জন প্রতিনিধিরা এ বিষয়ে এখনই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ না নিলে ভবিয্যতে মাদকের বড় ধরনের ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনে করছে বিজ্ঞ মহল।

মাদক সংক্রান্ত বিষযে জানতে চেয়ে  মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর বলছে, নিয়মিত অভিযান চলছে। তবে তারা মনে করছে—স্থানীয়দের সহযোগিতা ছাড়া এ সমস্যা কমানো কঠিন।

বাগেরহাট জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সহকারি পরিচালক মো. বুলু শেখ বলেন,আমরা প্রতিদিনই অভিযান করি। শহরের ও উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় নতুন কিছু হটস্পট চিহ্নিত করেছি। মানুষ তথ্য দিলে আমরা আরও দ্রুত অ্যাকশন নিতে পারবো। বাগেরহাটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোঃ শামীম হোসেন বলেন, শুধু প্রশাসনিক ভাবে নয় সামাজিক দায়বদ্ধতার জায়গা থেকে আমাদের প্রত্যেককে মাদকবিরোধী কার্যক্রমে এগিয়ে আসতে হবে। তাহলেই আমরা একটি সুস্থ, সচেতন ও মাদকমুক্ত প্রজন্ম গড়ে তুলতে পারব। বাগেরহাট জেলা পুলিশ মাদকবিরোধী অভিযানে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।সমাজকে মাদকমুক্ত রাখতে আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন—আইনশৃঙ্খলা, সামাজিক সচেতনতা আর পরিবার—এই তিন দিকেই জোর না দিলে মাদক নির্মূল সম্ভব নয়। বাগেরহাটের মানুষের একটাই দাবি—মাদককে রুখতে চাই দ্রুত, সমন্বিত ও কঠোর উদ্যোগ।