রবিবার, ২০ জুলাই ২০২৫, ০৮:০৯ অপরাহ্ন
বিজ্ঞপ্তি:

আগামীর বাংলাদেশে আরেকটা লড়াই হবে দুর্নীতির বিরুদ্ধে :ডাঃ শফিকুর রহমান

উত্তাল ডেস্ক”: / ২৮ বার
আপডেট সময় : রবিবার, ২০ জুলাই, ২০২৫

জাতীয় ঐক্যের নামে অহঙ্কার, তুচ্ছতাচ্ছিল্য আর অরাজনৈতিক ভাষা ব্যবহারকারীদের প্রতি কড়া হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডাঃ শফিকুর রহমান। তিনি বলেন, আবু সাঈদরা যদি বুক পেতে না দিতো, হয়তো আজকের বাংলাদেশ আমরা দেখতাম না। অনেকের জীবন হয়তো ফ্যাসিবাদীদের হাতে চলে যেত। আজকে যারা বিভিন্ন ভাবে দাবি-দাওয়া তুলে ধরছেন, তখন তারা কোথায় থাকতেন? সুতরাং অহঙ্কার করে, তুচ্ছতাচ্ছিল্য করে কাউকে ছোট করে কথা না বলি। না হলে আমরা বুঝে নেব, স্বৈরাচারী বীজ তাদের মনে বাসা বেঁধেছে।
শনিবার রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী আয়োজিত জাতীয় সমাবেশের সমাপনীতে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

জামায়াত আমির আরও বলেন, জাতীয় ঐক্যকে ধারণ করুন। অহংকার নয়, সংযম দেখান। অতীতে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই ছিল। সেই লড়াইয়ে আমরা জিতেছি। এখন আগামীর বাংলাদেশে আরেকটা লড়াই হবে দুর্নীতির বিরুদ্ধে। দুর্নীতিকে মূলোৎপাটনে আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকব। জামায়াতে ইসলামী সেই লড়াইয়ে ছিল, থাকবে এবং জয়লাভ করবে ইনশাআল­াহ।

বক্তব্যের শুরুতে তিন নেতা-কর্মীর মৃত্যুর খবর দিয়ে ডাঃ শফিকুর রহমান বলেন, আজকের সমাবেশে অংশ নিতে গিয়ে আমাদের তিন ভাই ইন্তেকাল করেছেন। আল­াহ তাদের জান্নাত দিন। পরিবারকে ধৈর্য ধরার তাওফিক দিন।

তিনি বলেন, জাতির সামনে আমাদের অনেক করণীয়। অতীতে বুক পেতে দিয়ে জামায়াত শহিদ দিয়েছে। আজ যারা নতুন কথা বলছেন, তাদের অতীতের অবস্থান ইতিহাসে নেই। সুতরাং আমরা জাতীয় ঐক্য চাই। কিন্তু কারো জাতিকে ছোট করে কথা বলার অধিকার নেই।

সবাইকে নিয়ে দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন জামায়াতে ইসলামীর আমির। তিনি বলেন, জামায়াত ইসলামী যদি আল­াহর মেহেরবানিতে ও জনগণের ভালোবাসা নিয়ে সরকার গঠন করে তাহলে কোনো মন্ত্রী ও এমপি সরকারি প্লট গ্রহণ করবে না। কোনো মন্ত্রী ও এমপি ট্যাক্সবিহীন গাড়ি ব্যবহার করবে না। কোনো মন্ত্রী ও এমপি নিজের হাতে টাকা চালাচালি করবে না। যদি কোনো এমপি বা মন্ত্রী নির্দিষ্ট কাজের জন্য বরাদ্দ পেয়ে থাকেন, কাজ শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশের আঠারো কোটি মানুষের কাছে প্রতিবেদন তুলে ধরতে বাধ্য থাকবে।”
ডাঃ শফিকুর রহমান বলেন, চাঁদা আমরা নেব না। দুর্নীতি করবো না। চাঁদা আমরা নিতে দেব না, দুর্নীতিও সহ্য করবো না। তিনি বলেন, চাঁদা আমরা নেব না। দুর্নীতি করব না। চাঁদা আমরা নিতে দেব না, দুর্নীতিও সহ্য করবো না। এমন বাংলাদেশই আমরা দেখতে চাই।

যুবকদের উদ্দেশ্যে জামায়াত আমির বলেন, তোমাদের সঙ্গে আমরা আছি। আমি আজ এখানে জামায়াতের আমির হিসেবে কথা বলতে আসিনি। আমি এসেছি বাংলাদেশের আঠারো কোটি মানুষের একজন হয়ে কথা বলতে। আমি শিশুদের বন্ধু, যুবকদের ভাই, আমি বয়স্কদের সহযোদ্ধা। আমি তাদের মুক্তির জন্যই এখানে দায়িত্ব নিয়ে দাঁড়িয়েছি।আল­াহর ইচ্ছা, শরীর আমাকে সাময়িকভাবে সহযোগিতা করেনি, এটাও আল­াহর ইচ্ছা যে, তিনি আমাকে এখন কথা বলার সুযোগ দিয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের নির্দিষ্ট কোনো শ্রেণির মানুষের জন্য আমাদের এই লড়াই নয়। রাস্তার একজন পরিচ্ছন্নতাকর্মী, চা-বাগানের শ্রমিক, রক্ত পানি করে ঘাম ঝরানো আমার একজন রিকশাচালক ভাই, মাঠে-ময়দানে বাংলাদেশের মানুষের মুখে যারা এক মুঠো ভাত তুলে দিতে চায় সেই কৃষক বন্ধুদের জন্য আমি এখানে কথা বলতে এসেছি। আমি কোনো অভিজাত শ্রেণির হয়ে এখানে কথা বলতে আসিনি।
জুলাই বিপ্লবের সময় শহিদ না হতে পেরে আফসোস করেন জামায়াত আমির। তিনি বলেন, আমি আজীবন মানুষের রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করেছি। জেল-জুলুমের পরোয়া করি নাই। আমার আফসোস, ২৪ সালে জাতিকে মুক্তি দিয়ে গিয়ে যারা জীবন দিয়ে শহিদ হলো কিন্তু আমি তাদের একজন হতে পারলাম না।
‘আপনারা আমার জন্য দোয়া করবেন, পরবর্তীতে যে লড়াই হবে, সে লড়াইয়ে যেন আল­াহ আমাকে শহিদ হিসেবে কবুল করেন’।”
জামায়াতের আমীর ডাঃ শফিকুর রহমান বলেন, ২০২৪ সালে জীবনবাজি রেখে যদি আন্দোলন না হতো তাহলে যারা আজ কথা বলছেন তারা কোথায় থাকতেন? তাই রাজনৈতিক শিষ্টাচার রক্ষা করে আমাদের কথা বলতে হবে।
তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, আগামীর বাংলাদেশটা কেমন হবে? আমি বলব আরেকটা লড়াই হবে। এই লড়াই হবে দুর্নীতির বিরুদ্ধে। এই লড়াইয়েও আমরা বিজয় লাভ করব। জামায়াত দুর্নীতিমুক্ত সমাজ গড়বে। এই কথা বলার পর প্রথমবার পড়ে যান তিনি। এরপর ফের দাঁড়িয়ে কথা বলা শুরু করার পর আবার পড়ে যান। এরপর তিনি মঞ্চে বসে বক্তব্য দেন। তিনি বলেন, কোনো এমপি মন্ত্রী টাকা চালাচালি করবে না। চাঁদা আমরা নেবো না, দুর্নীতি আমরা করব না। আমি জামায়াতের আমীর হিসেবে কথা বলতে আসি নাই। বাংলাদেশের নির্দিষ্ট শ্রেণির মুক্তির জন্য এই লড়াই নয়। আমি কোনো অভিজাত শ্রেণির হয়ে কথা বলতে আসি নাই। আমি কথা বলছি খেটে খাওয়া মানুষের জন্য। ইনসাফের ভিত্তিতে একটা দেশ গড়ে তোলার জন্য, আগামী দিনে যে লড়াই হবে আল­াহ যেন সেই লড়াইয়ে একজন শহিদ হিসেবে গ্রহণ করে।”
তিনি বলেন, পল্টন-শাহবাগ-পিলখানা-২৪’র গণহত্যা যারা করেছে তাদের বিচার বাংলাদেশে দৃশ্যমান করতে হবে। এদের বিচার না হওয়া পর্যন্ত পুরনো বন্দোবস্তে চলবে না। এতোগুলো মানুষ এমনি এমনি জীবন দেয় নাই। নতুন ব্যবস্থায় নতুন বাংলাদেশ গড়ে তোলা হবে ইনশাআল­াহ।
এর আগে এদিন রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর জাতীয় সমাবেশ শুরু হয়। বেলা ২টায় কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে সমাবেশের মূল পর্ব শুরু হয়।
সকাল ৯টা ৪০ মিনিটে সাংস্কৃতিক পরিবেশনার মধ্য দিয়ে শুরু হয় সমাবেশের প্রথম পর্ব। পরে দুপুর সোয়া ১২টার দিকে সমাবেশস্থলে উপস্থিত হন দলটির আমির ডাঃ শফিকুর রহমান। তিনি উদ্যানে প্রবেশ করলে রাস্তার দু’পাশে অবস্থান নেওয়া দলীয় নেতা-কর্মীরা শ্লোগানের মাধ্যমে তাকে স্বাগত জানান।”
জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে সাতদফা দাবিতে আয়োজিত এই সমাবেশে সকাল থেকেই নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের ব্যাপক উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে। সমাবেশ শুরুর অনেক আগেই সোহরাওয়ার্দী উদ্যান প্রায় কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়। হাজারো কর্মী-সমর্থক অবস্থান নিয়েছেন উদ্যানে ও তার আশপাশে।smk


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর

পুরাতন খবর

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১
১৩১৫১৬
১৯২০২১২২২৩২৪২৫
২৬২৭৩০৩১  
এক ক্লিকে বিভাগের খবর